পোশাক খাতের দুর্ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর নিষ্পত্তিতে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুপারিশ করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর টিআইবি কার্যালয়ে ‘তৈরি পোশাক খাতে সুশাসন: অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে টিআইবি এ সুপারিশ করে। পোশাক খাতের দুর্ঘটনার মামলাগুলো দ্রুত বিচার আইনে বিচারের দাবিও জানায় সংস্থাটি।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পোশাক খাতে বিভিন্ন দুর্ঘটনার পর অনেক সময় পার হলেও এখনও বিচার না হওয়া দুঃখজনক। রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো বিচার শেষ হয় নি। তাই এসব দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুত বিচার আইনে বিচার করা প্রয়োজন। এতে দুর্ঘটনায় মামলাগুলো অল্প সময়ে নিস্পত্তি করা যাবে।’
তিনি জানান, অবৈধ অর্থ রাখর দায়ে দুদকের একটি মামলায় ২০১৮ এর মার্চে রানা প্লাজার মালিকের তিন বছর ও মাকে ছয় বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ এতগুলো মানুষের প্রাণহানি হলো তার এখনও কোনো শাস্তি হয়নি।
টিআইবি চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনা প্রকাশ্যে দিবালোকে হয়েছে। দুর্ঘটনা কেন হেয়েছে, কেন ভাঙল ভবনটি, তা সবার কাছে পরিষ্কার। আহত ব্যক্তি ও নিহতদের আত্মীয় স্বজন অনেকেইই এ মামলার সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত রয়েছে। তারপরও সাক্ষ্যগ্রহণের অভাবে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে আসামিরা মামলাটি আটকে রেখেছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টার মতে, ‘এর মানে পরিস্কার যাদের প্রভাব আছে তারা সব কিছু করতে পারে। একটি বিচার নিস্পত্তির জন্য মেডিকেল রির্পোট, পুলিশ রির্পোটসহ নানান দিক থাকে। যার সব ক্ষেত্রেই হস্তক্ষেপ হয়। অর্থাৎ যারা রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী- তারা সবসময় বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। যা সামগ্রিক সুশাসন নিশ্চিতে অন্তরায়।
গবেষণা প্রতিবেদনে টিআইবির সহকারী প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুল হুদা মিনা বলেন, ‘রানা প্লাজার মালিক ও কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি এবং শ্রম আদালতে একধিক মামলা দযের করা হয়েছে। সিআইডির মামলায় ২০১৫ সালে দন্ডবিধিআইনে ৪১জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে। আসামি পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে এখন। আর ইমারত আইনের মামলায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। কিন্ত এর চ্যালেঞ্জ হলো আসামিরা ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের করেছে এ মামলা নিস্পত্তি এখনও হয় নি।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পোশাক কারখানায় নিরাপত্তাজনিত ১০২ টি পদক্ষেপের মধ্যে সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়েছে ৩৯ শতাংশ অর্থাৎ ৪০টি। চলমান অগ্রগতি হয়েছে ৪১শতাংশ অর্থাৎ ৪২টি এবং স্থবির রয়েছে ২০ শতাংশ অর্থাৎ ২০টি।